যিহূদার রাজা উষিয়
26
1-3 এরপর যিহূদার লোকরা অমৎসিয়র জায়গায় কিশোর উষিয়কে নতুন রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলো| উষিয় মাত্র 16 বছর বয়সে রাজা হয়ে 52 বছর জেরুশালেমে শাসন করেছিলেন| তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তিনি এলত্‌ শহরটি নতুন করে বানিয়ে যিহূদাকে ফেরৎ‌ দিয়েছিলেন|
উষিয়র মা যিখলিয়া ছিলেন জেরুশালেমের বাসিন্দা| উষিয় প্রভুর বাধ্য ছিলেন এবং তাঁর পিতা অমৎসিয়র মত জীবনযাপন করেছিলেন| সখরিয়র জীবদ্দশায় তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করে ও অনুপ্রেরণা পেয়ে উষিয় ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন| আর ঈশ্বরের প্রতি যতদিন তাঁর অবিচল ভক্তি ছিল প্রভু ঈশ্বরও তাঁকে সাফল্য দিয়েছিলেন|
উষিয় পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, গাত, যব্নি ও অস্দোদ শহরগুলোর চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছিলেন এবং অস্দোদ ও পলেষ্টীয় অধ্যুষিত অন্যান্য অঞ্চলগুলিতে নতুন শহরসমূহ তৈরী করেছিলেন| পলেষ্টীয় ও গূরবালে বসবাসকারী আরবীয় ও মিয়ূনীয়দের বিরুদ্ধে যখন উষিয় যুদ্ধ করেছিলেন, প্রভু উষিয়র সহায়তা করেছিলেন| অম্মোনীয়রা উষিয়র বশ্যতা স্বীকার করে তাঁকে উপঢৌকন পাঠায়| তাঁর অসীম সাহসের খ্যাতি মিশরের সীমান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে কারণ তিনি খুব ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন|
জেরুশালেমের কোণার ফটকে, উপত্যকার ফটকে এবং প্রাচীরের বাঁকের মুখে উষিয় সুদৃঢ় নজরদারি স্তম্ভসমূহ তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলোর সবগুলোকে দূর্গ দিয়ে বেষ্টিত করেছিলেন| 10 উষিয় জনহীন স্থানে কয়েকটি গম্বুজ বানিয়েছিলেন, কারণ পার্বত্য অঞ্চলে ও সমভূমিতে তাঁর বিস্তর গবাদি পশু ছিল| তিনি পাহাড়তলী এবং উপত্যকাবর্তী সমভূমিতে কৃষকও রেখেছিলেন ও কারমেলে দ্রাক্ষাক্ষেত দেখাশোনার লোক রেখেছিলেন যেহেতু তিনি কৃষিকাজ ভালবাসতেন|
11 উষিয়র একটি সুদক্ষ সেনাবাহিনীও ছিল| যিয়ূয়েল নামে এক সচিব ও মাসেয় নামে জনৈক অধ্যক্ষ মিলে গুণে গেঁথে সেনাবাহিনীটিকে কয়েকটি দলে বিভক্ত করে হনানিয়কে প্রধান সেনাপতি পদে নিয়োগ করেছিলেন| হনানিয় ছিলেন রাজার অধীনস্থ পদস্থ চাকুরেদের অন্যতম| 12 সেনাবাহিনীকে যারা নির্দেশ দিতেন তাদের মধ্যে মোট 2600 জন পরিবারের নেতা ছিলেন| 13 এই লোকরা 307,500 যোদ্ধার এই সৈন্যদলকে পরিচালনা করতেন, যারা যে কোন শত্রুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত পারদর্শীতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারত| 14 উষিয় তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য বল্লম, ঢাল, শিরস্ত্রাণ, তীর, ধনুক ও গুলতির জন্য পাথর তৈরি করিয়েছিলেন| 15 জেরুশালেমে প্রাচীরের ওপরে এবং নজরদারির স্তম্ভগুলোর ওপরে পারদর্শীদের দ্বারা আবিস্কৃত বিশেষ ধরণের গুলতিসমূহ বসানো হয়েছিল যেগুলো পাথর ও তীর ছুঁড়তে পারত| দূরদূরান্তে উষিয়র খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি ক্রমে বিখ্যাত ও শক্তিশালী এক রাজায় পরিণত হন|
16 কিন্তু শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষিয়র দম্ভ তাঁকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়, কারণ তিনি প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করতে শুরু করেন| এমনকি উষিয় একবার প্রভুর মন্দিরের বেদীতে ধুপধূনো জ্বালাতেও গিয়েছিলেন| 17 যাজক অসরিয় ও প্রভুর সেবায় নিযুক্ত আরো 80 জন সাহসী যাজকও উষিয়কে অনুসরণ করেন| 18 তাঁরা উষিয়কে থামিয়ে দেন ও সতর্ক করে বলেন, “ধুপধূনো জ্বালাবার অধিকার আপনার নেই, এ কাজ একমাত্র হারোণের এবং যাজক উত্তরপুরুষরা করতে পারেন কারণ এ কাজের জন্য তাঁদের নির্দিষ্ট করা হয়েছে| আপনি অনুগ্রহ করে পবিত্রতমস্থান থেকে চলে যান| আপনি অনধিকার প্রবেশ করেছেন এবং এটা প্রভুর কাছ থেকে আপনাকে সম্মান এনে দেবে না|”
19 কিন্তু একথা শুনে, উষিয় যাজকদের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন| তাঁর হাতে ছিল একটি ধুনুচি এবং সে সময়ে যাজকদের চোখের সামনে বেদীর পাশে দাঁড়ানো অবস্থাতেই উষিয়র কপালে কুষ্ঠরোগের লক্ষণ ফুটে উঠলো| 20 অসরিয় ও অন্যান্য যাজকরা উষিয়র কপালে কুষ্ঠর চিহ্ন ফুটে উঠতে দেখে জোর করে তাঁকে মন্দির থেকে বের করে দিলেন| উষিয় দ্রুত মন্দির ছেড়ে চলে গেলেন কারণ শাস্তিস্বরূপ প্রভু তাঁকে চর্মরোগ দিয়েছিলেন| 21 এইভাবে মৃত্যুর দিন অবধি রাজা উষিয়র চর্মরোগ ছিল এবং তিনি প্রভুর মন্দিরে প্রবেশের অধিকার হারালেন| তাঁর পুত্র যোথম তাঁর রাজত্বের শেষদিকে শাসক হিসেবে রাজপ্রাসাদ ও লোকদের ওপর কর্তৃত্ব করতেন|
22 প্রথম থেকে শেষাবধি উষিয় আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই আমোসের পুত্র ভাববাদী যিশাইয় লিখে গিয়েছিলেন| 23 উষিয়র মৃত্যুর পর তাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর না দিয়ে তাঁদের সমাধিক্ষেত্রের নিকটস্থ এক মাঠে সমাধিস্থ করা হয়| তিনি কুষ্ঠরোগী হওয়ায় লোকরা তাঁকে রাজাদের সমাধিক্ষেত্রে সমাধিস্থ করেনি| তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র যোথম তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন|